*** পালকির গান ***
সত্যেন্দ্রণাথ দত্ত
২.শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি ।অর্থ বলি।
গগন, আদুল, পাটা, ভনভনিয়ে , কষে ,হাটুরে,ধুঁকছে,অঙ্গ, স্তব্ধ, ধায়,শুষছে।
উত্তর:
গগন-আকাশ। আদুল-খালি গায়ে বা জামা কাপড় ছাড়া।
পাটা-পট্ট,তক্তা, ফলক। ভনভনিয়ে-ভনভন শব্দ করে এমন।
কষে-জোরে। হাটুরে-জিনিসপত্র কেনার জন্য যে হাটে যায়।
ধুঁকছে-হাঁপাচ্ছে। অঙ্গ-দেহ, শরীরের অংশ।
স্তব্ধ-নিস্পন্দ,নীরব। ধায়-ছোটে বা ছুটে চলে।
শুষছে-তরল পদার্থ টেনে নিচ্ছে।
৩.ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
পাটার, ময়না, আদুল, হাটুরেরা, গগনে, দুধের চাঁছি পালকি।
উত্তর:
ক.সকালে পূর্ব গগনে সূর্য ওঠে।
খ.শিশুরা বাড়ির উঠানে আদুল গায়ে খেলা করছে।
গ.পাটার ওপর বসে দোকানদার জিনিস বিক্রি করছেন।
ঘ.ময়না মনের আনন্দে মিষ্টি বানাচ্ছেন।
ঙ.হাটের শেষে হাটুরেরা বাড়ি ফিরছেন।
চ.খোকা দুধের চাঁছি খেতে ভালোবাসে।
ছ.পালকি চড়ে বউ নাইওরে যান।
৫.নিচের শব্দগুলো দেখি।এ ধরনের আর ও কয়েকটি শব্দ লিখি।
উত্তর:
ক.শনশন খ.হনহন গ.পিলপিল।
ঘ.গমগম। ঙ.ঝনঝন। চ.মড়মড়।
৬.প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক.দুপুরের রোদে পালকির বেহারাদের কী অবস্থা হয়েছে?
উত্তর:দুপুরের প্রচন্ড রোদ মাথায় পালকির বেহারারা পালকি কাঁধে এগিয়ে চলছে।অসহ্য গরমে তারা হাঁপিয়ে উঠছে।মনে হয় যেন আকাশ থেকে আগুন ঝড়ে পড়ছে।এর মধ্যে টলতে টলতে বেহারারা গান করতে করতে ঘেমে নেয়ে গন্তব্যে ছুটে যাচ্ছে ।অসহ্য গরমে তাদের খুবই করুণ অবস্থা।
খ.পাটায় বসে ময়রা কী করছেন?
উত্তর:রোদে প্রচন্ড তাপে মানুষজন সব হাঁপিয়ে উঠেছে।কেনাবেচা তেমন হচ্ছে না।পাটায় বসে ময়রার চোখ বুজে আসছে।ঘুমের আবেশে জোরে জোরে ঢুলছে।
গ.হাটুরে কোথায় যাচ্ছেন।
উত্তর:কড়া রোদের তাপে মানুষ অতিষ্ঠ।তাই একেবারে প্রয়োজন না হলে কেউ ঘর-বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না।হাটুরেদের বেচাকেনা ও তাই তেমনটা নেই।দুপুর হতেই হাট ভেঙে যায়।ক্লান্ত শরীর নিয়ে তখন তারা বাড়ির দিকে ধেয়ে চলে।
ঘ.কুকুরগুলো ধুঁকছে কেন?পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর:সূর্য এর প্রচন্ড তাপে অসহ্য গরম লাগছে।যেন আকাশ থেকে সূর্য আগুন ছড়িয়ে দিচ্ছে।মানুষ , পশুপাখি ,জীবজন্তু সবাই হাঁপিয়ে উঠেছে।কুকুরগুলো ও অসহ্য গরমে ক্লান্ত হয়ে ধুলো শুঁকছে আর ধুঁকছে।
ঙ.বেহারারা পালকিতে কী নিয়ে যাচ্ছেন?
উত্তর:যারা পালকি বয়ে লোকজন আনা-নেওয়া করেন তাদেরকে বেহারা বলে।আমাদের দেশের বিয়েতে বর কনেকে বহন করার জন্য সাধারণত পালকির ব্যবস্থা করা হয়।এদেশে এটি একটি সংস্কৃতি।তাই বেহারা পালকিতে বর-কনেকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন
** বড় রাজা ছোট রাজা **
১.শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি।অর্থ বলি।
দিগবিজয় ,সেনাপতি, রাজত্ব,জয়ঢাক, চর, দূত,অগোচর,খাপ্পা,মন্ত্রণা,অনুবীক্ষণ, ফৌজ,অসত্র, সন্ধি,রথ-রথী, ঝুপঝাপ,রাজ্য, মুঠো।
উত্তর:
দিগবিজয়-চারদিকের নানা জায়গা জয় করা।
সেনাপতি-সেনাদলের প্রধান, প্রধান সৈনিক।
রাজত্ব-রাজার শাসন যেখানে চালু আছে।
জয়ঢাক-জয়ী হওয়ার পর যে ঢাক (এক ধরনের বাদ্য)বাজানো হয়।
চর-গোপন খবর সংগ্রহ করে দেন যিনি।যুদ্ধের কৌশল হিসেবে এই চর নিয়োগ করা হয়।
দূত-বার্তাবাহক। অগোচর-চোখের আড়াল। মন্ত্রনা-পরামর্শ।
অণুবীক্ষণ-মাইক্রোস্কোপ, এমন একটি যন্ত্র যার মাধ্যমে ছোট জিনিসকে বড় দেখা যায়।
ফৌজ-সৈনিক। অস্ত্র-হাতিয়র। সন্ধি-বন্ধুত্ব।
রথ-রথী-বিশেষ ধরনের গাড়ি ও তাতে চড়ে যুদ্ধ করেন যিনি।
ঝুপঝাপ-পতনের শব্দ। রাজ্য-রাষ্ট্র,যে দেশে পৃথক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত আছে।
মুঠো-মুষ্টি।
২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি ।অর্থ বলি।
ফাঁপরে, অন্যত্র, আন্দাজ, জয়ঢাক,দিগবিজয়, রাজসিংহাসনে।
উত্তর:
ক.সমস্ত ছোট রাজ্য জয় করে রাজা রাজসিংহাসনে বসলেন।
খ.রাজার খামখেয়ালিতে মন্ত্রী মহা ফাঁপরে পড়লেন।
গ.রাজা দিগবিজয় করে এসেছেন।
ঘ.শিকারের খোঁজে রাজা অন্যত্র যাচ্ছেন।
ঙ.রাজ্য জয়ের আনন্দে চারিদিকে জয়ঢাক বাজছে।
চ.রাজা আন্দাজ করলেন ছোট রাজা পালিয়ে যেতে পারেন।
৪.বাক্য রচনা করি।
রাজ্য, চর, রথ, মুঠো,রাজসিংহাসন।
উত্তর:
রাজ্য-এ দেশ এক সময় কয়েকটি রাজ্যে বিভক্ত ছিল।
চর-গোয়েন্দাদেরকে ও এক ধরনের চর বলা হয়।
রথ-রাজায় রথে চড়ে শিকারে যান।
মুঠো-এক মুঠো গুড় ও এক চিমটি লবণ দিয়ে বাড়িতে স্যালাইন তৈরি করা যায়।
রাজসিংহাসন-রাজা যে সিংহাসনে বসে রাজ্য পরিচালনা করেন তাকে রাজসিংহাসন বলে।
৫.বাম পাশের শব্দাংশের সাথে ডান পাশের ঠিক শব্দাংশ মিলিয়ে বাক্য পড়ি ও লিখি।
উত্তর:
বড় রাজা আর ছোট রাজা –দিগবিজয় করতে চললেন।
ক্রমে ক্রমে মস্ত বড় এই পৃথিবী –বড় রাজা জয় করে ফেললেন।
ছোট শহর এতটাই ছোট যে –সেখানে হাতি চলে না ,ঘোড়া চলে না।
বড় রাজার আঙুল ফুলে –ঢোল হয়ে ওঠল।
বড় বড় অস্ত্র –বড় জিনিসকেই লক্ষ করে।
৬.একই শব্দের অর্থ শিখি ও বাক্য তৈরি করি।
উত্তর:
চর-দূত=রাজা গুপ্তচর মারফত খবর পেলেন।
চর-নদীর চর=নদীতে চর জেগে উঠেছে।
চলা-পায়ে হাঁটা=চলার পথে তার সঙ্গে দেখা।
চলা-চালিত হওয়া=গাড়ি আবার চলতে শুরু করল।
৭.প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক.বড় রাজা কীভাবে রাজ্য জয় করতে বের হলেন?
উত্তর:বড় রাজা বের হলেন বড় বড় হাতি ,ঘোড়া, কামান,বন্দুক সাজিয়ে।মস্ত জয়ঢাক পিটিয়ে বড় বড় সেনাপতির সঙ্গে।আর বড় বড় রাজ্য জয় করতে করতে।
খ.বড় রাজা ছোট রাজার উপর রেগে গেলেন কেন?
উত্তর:বড় রাজা একে একে সব বড় বড় রাজ্য জয় করে ফেলেন।কিন্তু তিনি জানতে পারেন যে ছোট রাজা ছোট ছোট রাজ্য নিয়ে সুখে জীবনযাপন করছেন।তাই তিনি ছোট রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।কিন্তু যুদ্ধে ছোট রাজাকে পরাজিত করতে না পেরে তার সাথে সন্ধির প্রস্তাব রাখেন।ছোট-রাজা বড় রাজার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তিনি ছোটতে –বড়রেত সন্ধি হলে কী হয় তা জানেন কিনা জানতে চেয়ে তিরস্কার করে বলে বড় রাজা ছোট রাজার উপর রেগে গেলেন।
গ.বড় রাজা কেন ছোট রাজ্যকে জয় করতে পারলেন না?
উত্তর:বড় রাজার বড় বড় অস্ত্রশস্ত্র ,কামান,গোলাবারুদ থাকলেও ছোট রাজার রাজ্যে তিনি জয় করতে পারলেন না।কারণ ছোট রাজা ও তাঁর রাজ্যে এতই ছোট ছিল যে কেউ খালি চোখে তাকে দেখতে পায় না।তাঁর রাজ্যে হাতি –ঘোড়া কিছুই চলে না।এ কারণে বড় রাজা চেষ্টা করে ও ছোট রাজ্যকে জয় করতে পারলেন না।
ঘ.ছোট রাজা কেন সন্ধি করতে চাইলেন?
উত্তর:ছোট রাজা ও তাঁর রাজ্য এতটাই ছোট ছিল যে কেউ তা খালি চোখে দেখতে পায় না।বড় রাজা ও তাঁর সেনাপতিরা চোখে অণুবীক্ষণ যন্ত্র লাগিয়ে যুদ্ধ করে ও ছোট রাজ্যে জয় করতে পারেন না।তাই বড় রাজা সন্ধি করতে চাইলেন।
ঙ.বড় রাজা আর ছোট রাজার মধ্যে তোমার কাকে বেশি পছন্দ?কেন?
উত্তর:আমার ছোট রাজাকে বেশি পছন্দ।কারণ ছোট রাজা অল্পতেই তুষ্ট থাকেন।তিনি কারও ক্ষতি চান না ।তিনি কারও ক্ষতি করেন না ।তাঁর কাছে যা আছে তা নিয়েই তিনি সুখী।তাছাড়া তিনি এতটাই ক্ষুদ্র যে বড়দের হাত-পায়ের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন।তাকে কেউ আটকাতে পারে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন